২০১৯ সালের ৩ জুন “ ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি”র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি এবং পুরুলিয়া শাখার সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো, সিধু কানু বিরষা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Sidhu-kanho-Birsha University) ভাইস চ্যান্সেলর এবং রেজিস্টারকে তাদের বিভিন্ন ফর্ম (Form)-এ ধর্মীয় (Religion) কলামে মানবতাবাদ বা মানবধর্ম রাখার আবেদন জানান।
স্বাভাবিক ভাবেই অনেকে হয়তো ভাববেন, বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে ৪২০০টি প্রতিষ্ঠানিক ধর্ম (Religion) থাকতে হটাৎ মানবধর্ম কেন বা কি প্রয়োজনে? অথবা, এই মানবধর্ম বিষয়টি আদতে ঠিক কি?
দেখা যাচ্ছে, সমস্ত প্রতিষ্ঠানিক ধর্মেই নিজেদের কে শ্রেষ্ঠত্বের দাবী জানায়। মানবতা এবং পরধর্মের প্রতি সহিষ্ণুতার লোকদেখানো প্রচারও করে থাকে কিন্ত সেটাই যদি সত্য হতো তাহলে ধর্মের নামে, জাতপাতের নামে হিংসা, বিদ্বেষ, রক্তপাতের খবর শোনাই যেতো না। ‘ধর্ম মানবতা শেখায়’ কথাটা আসলে সোনার পাথরবাটির মতন ব্যপার। এটি সর্বৈব মিথ্যে এবং অপপ্রচার।
প্রথম মানবধর্ম সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৯ সালে নিউইয়র্কে। অর্থাৎ রাষ্ট্রসংঘের অধিকার ঘোষণার অনেক আগে। এই মানবধর্মীরা তখন ধর্মগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। ১৯২৯ সালে পাশ্চাত্যে “Humanism” নামে যে নতুন Ism বা মতবাদের জন্ম হয়েছিল সেটা ছিল ইহুদি- খ্রিস্টান কট্টর পন্থীদের অবিরাম সংঘর্ষের একটা ফলস্বরূপ। তখনকার গণ্যমান্যরাই ছিলেন এই দলে। এঁরা মানবধর্মকে অন্য সমস্ত প্রচলিত ধর্মের বিকল্প হিসেবে চেয়েছিলেন। এদের উপদেষ্টাদের মধ্যে ছিলেন Albert Einstein, Will Durant, Thomas Mann, Julian Huxley ইত্যাদি জ্ঞানী গুণী যোদ্ধারা। এদের পথপ্রদর্শক ছিল আধুনিক প্রকৃতিবিজ্ঞান। তাদের আস্থা ছিল, প্রত্যয় ছিল কিন্তু ছিল না অন্ধবিশ্বাস। তাদের আস্থা ছিল গণতন্ত্রে, বিজ্ঞানে, সব মানুষের সমান অধিকারে।
এখন এই ধর্মীয় স্বাধীনতার যুগে অনেক বিশ্বাস বা Cult যা ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে উঠে এসেছে, তাঁরা আলাদা স্বীকৃতি চাইছেন। যেমন রামকৃষ্ণের ভক্তরা “Ramkrishnaite” হিসেবে আলাদা ধর্মীয় স্বীকৃতি চাইছিলেন বেশ কিছু বছর ধরেই। কিন্তু তাঁরা মূলত হিন্দু বলেই তাঁদের এই আবেদন বাতিল করে দেয় সরকার। অবাক লেগেছিল যখন একজন সফল আবেদনকারীর চাকরিতে ঢোকা নাকচ হয়ে যায় শুধুমাত্র “Religion” কলামে “মানবতাবাদ” লেখার জন্য। যেন মানবিক হওয়াটা খুব গর্হিত অপরাধ।
সেটা ১৯৯২-৯৩ সাল। যুক্তিবাদী আন্দোলন তখন তুঙ্গে। এই বাংলার ছেলে মেয়েরা সরকারি, বে-সরকারি সমস্ত আবেদনপত্রে “ধর্ম” কলাম তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। “ধর্মপালন বা ধর্মাচরণ কারোর ব্যক্তিগত ব্যপার, একটি ধর্মনিরপক্ষে রাষ্ট্রে ধর্মীয় পরিচয় জানানো জরুরি নয়। যাঁরা কোন প্রতিষ্ঠানিক ধর্ম মানেন না তাঁদের form বাতিল করা হচ্ছে অসম্পূর্ণ বলে। এই সময় এগিয়ে আসে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’র সিস্টার কনসার্ন “Humanists Association of India” বা “ ভারতের মানবতাবাদী সমিতি” এবং সক্রিয় হয় মানবতাকে ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে।
মানবতাবাদী সমিতি সরাসরি চিঠি পাঠায় রাষ্ট্রসংঘের অফিসে। উত্তরও আসে দেরি না করেই। UNO তাদের Human Rights এবং Religious Rights সংক্রান্ত যাবতীয় বই ও কাগজপত্র পাঠিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ‘১৯৮১-র জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে রাষ্ট্রসংঘ ঘোষণা করেছে প্রতিটি মানুষের যে কোনো ধর্মমত গ্রহণ করার ও চর্চা করার স্বাধীন অধিকার আছে।’ তারপরই এই আইনি লড়াইতে যৌথভাবে নেমে পড়ে মানবতাবাদী সমিতি ও যুক্তিবাদী সমিতি। একটা চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, সাংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও বিদেশি দূতাবাসেও। তারপর মানবতাবাদী সমিতি’র সহায়তায় কোর্টে গিয়ে Affidavit করে দলে দলে ছেলেমেয়ে Humanism-কে ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করে ১৯৯৩ সালে ১০ ডিসেম্বর। ১৯৯৩ সালে ১০ ডিসেম্বর “বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে” প্রথম ৫৪ জন সদস্য-সদস্যা আইনিভাবে Humanist হন।
এই কঠিন লড়াইটা জেতার পর এখন আর কোন বাধা নেই– যে কোন রাষ্ট্রসংঘের সদস্য দেশে এই একই ভাবে যে কেউ প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে নিজেকে HUMANIST ঘোষণা করতে পারেন সগর্বে।
প্রসঙ্গত জানাই, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে বোম্বে হাইকোর্ট একটি রায়ে স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছে, রাষ্ট্র কাউকে তার ধর্ম জানাতে বাধ্য করতে পারবে না। তিনি কোনও ধর্মের অন্তর্ভুক্ত নন বা কোনও ধর্ম পালন করেন না -- এই দাবী করার সাংবিধানিক অধিকার আছে প্রত্যেক নাগরিকের। (State can compel none to declare or specify his/her religion. Citizens have Constitutional Right to belong to 'No Religion'.----- Bombey H C Ruling.
এটি পড়ুন –
No person in India can be compelled to declare his religion: HIGH COURTS
Bombay High Court: In a landmark judgment, a bench comprising of A.S. Oka and A.S. Chandurkar, JJ declared that by virtue of Article 25 of the Constitution, every individual has the right to claim that he does not practice or profess any religion and thereby directed the state that they cannot compel any individual to declare or specify his religion in any form or in any declaration.
In the present case the petitioners were members of a registered organization “Full Gospel Church of God”. Though they believed in the existence of Lord Jesus Christ but they did not believe in any religion, much less Christianity. According to their belief, Lord Jesus Christ desired to have a kingdom of heaven and not to form any religion. Therefore, they wanted a gazette notification to be issued recording that they were not Christians and that they belong to ‘no religion’. This application was rejected by Government Printing Press against which they filed a public interest litigation in Court.
The Court took into consideration various judgments including Commissioner of Police v. Acharya Jagadishwarananda Avadhuta (2004) 12 SCC 770 where it was stated that ‘man’s relation to his God is no concern of the State’. The Bench also observed that Article 25 (1); of the Constitution is in two parts. The first part confers fundamental right to freedom of conscience whereas the second part confers a right on a citizen to freely profess, practice or propagate any religion. The Court clarified that as freedom of conscience confers a fundamental right to entertain a religious belief, it also confers a right on an individual to express an opinion that he does not belong to any religion. Therefore, no authority which is a state within the meaning of Article 12 or any of its agency or instrumentality can infringe the fundamental right to freedom of conscience and thereby, the Court set aside the order of the Government Printing Press. Dr. Ranjeet Suryakant Mohite vs. Union of India, Public Interest Litigation No. 139 of 2010, decided on 23.09.2014
News Link: https://www.scconline.com/blog/post/2014/09/26/no-person-in-india-can-be-compelled-to-declare-his-religion/
এখানে আরেকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ খবর তুলে ধরলাম।
“ইচ্ছামতো ধর্ম গ্রহণ ভারতে।”
ইনকিলাব ডেস্ক। প্রকাশের সময়: ১১ এপ্রিল, ২০২১
১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কোনো নাগরিক তার ইচ্ছামতো ধর্ম গ্রহণ করতে পারবে বলে সংবিধানে অধিকার দেয়া রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার ভারতের উচ্চ আদালতে অশ্বিন উপাধ্যায় নামে আইনজীবীর আবেদনের প্রতিউত্তরে এমন মন্তব্য করেছেন। এছাড়া এ বিষয়ে ‘এরকম ক্ষতিকর’ পিটিশন করার জন্য নিন্দাও জানিয়েছে আদালত। অশ্বিনের আবেদন ছিল, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্মান্তরকরণ বন্ধের জন্য সর্বোচ্চ আদালত কেন্দ্র ও রাজ্যগুলোকে যেন নির্দেশ দেয়। সংবিধান বিরোধী এমন আবেদন করায় অশ্বিনের আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণকে নিন্দা জানিয়েছেন বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বি আর গাভাই ও ঋষিকেশ রায়কে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ। বিচারপতিরা বলেন, একজন সিনিয়র আইনজীবী হওয়ার পরও সংবিধানে নাগরিকদের অধিকারের বিষয়ে জানা নেই আপনার। যদি না জানেন তাহলে আবেদনকারীর প্রতিনিধিত্ব করার আগে তা জেনে নিতে পারেন। এভাবে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য আমরা আপনার এবং আপনার নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারি। সূত্র- দ্য হিন্দু।
খবরটির লিংক - https://m.dailyinqilab.com/article/372707/%E0%A6%87%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%A4%E0%A7%8B-%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE-%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%A3-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%87
আমজনতার বৃহৎ অংশ 'ধর্ম' বলতে উপাসনা / প্রতিষ্ঠানিক ধর্ম এবং ধর্মগ্রন্থ বলতে উপাসনাধর্ম বিষয়ক বই-পত্র কেই বোঝেন। অভিধানে ‘ধর্ম’ বা ‘ রিলিজিয়ন’ (Religion) শব্দের অর্থ লেখা হয়েছে - (১) ধর্ম মানে - সাম্প্রদায়িক, ঈশ্বর উপাসনা, রীতি-নীতি, ঈশ্বর এবং পরলোকের অস্তিত্বে বিশ্বাস। যেমন -হিন্দু, খ্রীষ্টান, ইসলাম ইত্যাদি ৪২০০ প্রকার। (২) Religion [ রিলি'জন ]n. ধর্ম: human recognition of a personal God entitled to obedience.. আবার, (৩) ধর্ম মানে - গুণ (Property) বৈশিষ্ট (Characteristic)। যেমন - আগুনের ধর্ম বা গুণ দহন, জলের ধর্ম বা গুণ তরলতা, তরোয়াল এর ধর্ম বা গুণ তীক্ষ্ণতা ইত্যাদি। ধর্মবিশ্বাস ; any system of faith and worship বোঝায়।
বহু ব্যক্তিরা এই প্রশ্নটিও তোলেন যে, কি এই মানবতাবাদ অথবা HUMANISM? কেন মেনে নেবো একে? এর উত্তরটি বেশ সহজ। HUMANISM কে ভাঙ্গলে আমরা কি পাই দেখা যাক। HUMAN অর্থাৎ ‘মানব’ বা মানুষ এবং ism হচ্ছে ‘মতবাদ’। দুয়ে মিলে দাঁড়ায়, মানবের মতবাদ কিংবা একজন মানুষের নিজস্ব মতবাদ এবং একজন মানুষের নিজস্ব মতবাদ কখনওই জন্মসূত্রে পাওয়া প্রতিষ্ঠানিক ধর্ম (Religion) যেমন- হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ইত্যাদি পরিচয় হতে পারে না। কারন, একটি শিশু যখন জন্ম নেয় তখন সে জানেই না তার ধর্মচিহ্ন বা ধর্মবিশ্বাস ঠিক কি। শিশুটি জানেই না, জাতপাত, ধর্মীয় আচার আচরণ, ধর্মীয় বিদ্বেষ কাকে বলে। শিশুটি শুধু জানে প্রাণখুলে খেলতে, আনন্দে বাঁচতে। একটি শিশুর মস্তিষ্ক মাটির তালের ন্যায়। কুমোর যেমন চরকায় মাটির তাল ফেলে ইচ্ছেমত আকার দেয় তেমনই পরিবারের শিশুদের গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন তাদের অভিভাবকেরা। কেউ, ছোট থেকেই শিশুদের ধর্মহীন, জাতপাতহীন মুক্তমনা গড়তে চেষ্টা করেন তো কেউ আবার ধার্মিক। মানবতাবাদ=নাস্তিকতাবাদ + মানবিক গুণ।
তাই যিনি নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী যুক্তিবাদী নন তিনি মানবতাবাদী হতে পারেননা, তিনি মানবিক গুনসম্পন্ন ব্যক্তি হতে পারেন কিন্তু মানবতাবাদী নন।
উইকিপিডিয়া জানাচ্ছে, “বর্তমান যুগে যারা শুধু বিজ্ঞান ও বির্বতনকে বিশ্বাস করে তারা মানবধর্ম পালন করে। তারা স্বাধীন।তারা আধুনিক বিজ্ঞানকে আর্দশ মনে করে। মানব ধর্মে বিশ্বাসীগণ নাস্তিক নামেও পরিচিত,কারণ তারা আদিমকালের কোন ধর্মই বিশ্বাস করে না, পালন করে না। ৭৭১.৫০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মানবধর্মে বিশ্বাসী পুরো পৃথিবীতে ২০ কোটি প্রায়। মানব ধর্মের উল্লেখ, কবি ‘লালন শার্হ’ তার কবিতায় বলেছেন। তিনি চেয়েছেন ধর্ম, জাত, বর্ণের কোন ভেদাভেদ না রেখে সবাই মানবধর্মে মনোযোগ দেই, মানবধর্ম পালনে বিশ্বাসী হই।”
এই প্রসঙ্গে জানাতে চাই, Humanitarianism আর Humanism এই দুয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। Humanism বা মানববাদ মানুষের বৌদ্ধিক চেতনা নিয়ে কথা বলে। অপরদিক Humanitarianism মানুষের মানবিক গুণাবলী যেমন প্রেম ভালোবাসা, দয়া, দায়িত্বশীলতা ইত্যাদির কথা বলে।
আজ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার বিচারে নাস্তিক /অধার্মিক / যুক্তিবাদীরা তৃতীয় স্থানে (সূত্র- মনোরমা ইয়ারবুক ২০১৯। যাকে মান্যতা দেয় ওয়ার্ল্ড অ্যালম্যানাকও)। ২০১২ সালের ‘উইন গ্যালপ গ্লোবাল ইনডেক্স অফ রিলিজিয়ন রিপোর্ট’ অনুযায়ী ভারতের মোট জনসংখ্যার ৩ শতাংশ ছিল ঘোষিত নাস্তিক। এই হিসেবে ১৩০ কোটির দেশ ভারতে নাস্তিকদের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৯০ লক্ষ। অন্যদিকে, অনেকে দেশে এখন নাস্তিকরাই সংখ্যাগুরু, এ তথ্য ছাপা হয়েছে শারিয়াপন্থী দলগুলোর সমর্থক দৈনিক ‘আমার দেশ’ এ, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬, গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনাল জরিপ।
ইউরোপের অনেকে দেশে এখন নাস্তিকরাই সংখ্যাগুরু। চীনে ৬১ শতাংশ সরাসরি স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করে। সুইডেনে ৮ শতাংশ উপাসনালয়ে ধর্মচর্চা করে, ৭৬ শতাংশ নাস্তিক।
চেক প্রজাতন্ত্রে ১২ শতাংশ গির্জায় ধর্মচর্চা করে, ৭৫ শতাংশ নাস্তিক। ব্রিটেনের ৫৩ শতাংশের ধর্মবিশ্বাস নেই। হংকংএর নাগরিকদের ৬২ শতাংশে কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নয়। জাপানে নাস্তিকের সংখ্যা ৬২ শতাংশ। জার্মানিতে ৫৯ শতাংশ নাস্তিক। স্পেনের নাগরিকদের বড় একটা অংশই নাস্তিক। অস্ট্রিয়ার নাগরিকদেরও বড় অংশ নাস্তিক। ফ্রান্সের নাগরিকদের বৃহত্তর অংশ নাস্তিক।
এসব তথ্য এটাই কি প্রমাণ করে না যে, নাস্তিক / অধার্মিক / যুক্তিবাদী / মানবতাবাদীদের বিশ্বজয় নিশ্চিত। যতই কট্টরপন্থী, মৌলবাদীরা অস্ত্রের প্রয়োগে মুক্তচিন্তকদের হত্যা করুক তবুও তাদের দুর্বার গতিকে আটকানোর নেই সাধ্য কারোরই। রইলো আরেকটি মন ভালোকরে দেওয়া খবর-
“কলেজে ভর্তির ফর্মে সবার উপরে মানবধর্ম”
ধর্মের নাম মানবতা। পড়ুয়াদের ভর্তির ফর্মে এ বার চাইলে এমনটাও লিখতে পারেন কোনও আবেদনকারী। এ বছর ভর্তির জন্য অনলাইনে ফর্মে পড়ুয়াদের জন্য এই সুযোগ করে দিচ্ছে কলকাতার বেথুন কলেজ এবং মেদিনীপুর কলেজ।
গত সোমবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরে সেই রাত থেকেই অনলাইনে বিভিন্ন কলেজের ফর্ম পূরণ শুরু হয়েছে। আর সেখানেই বেথুন ও মেদিনীপুর কলেজের জন্য ফর্ম ভর্তি করতে গিয়ে আবেদনকারী ছাত্রীরা দেখতে পাচ্ছেন, ধর্মের কলামে তালিকার প্রথমেই রয়েছে মানবধর্ম। হিন্দু, ইসলাম, খ্রিস্ট বা অন্য যে কোনও ধর্মকে বাদ দিয়ে মানবতাকে নিজের ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করার সুযোগ পাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা।
কেন এই উদ্যোগ? বেথুন কলেজের অধ্যক্ষা মমতা রায় জানাচ্ছেন, গত বছরও কলেজে ভর্তির অনলাইন ফর্ম থাকলেও তাতে মানবতাকে নিজের ধর্ম বলে বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল না। তিনি বলেন, “অনেক আবেদনকারী হয়তো কোনও ধর্মেই বিশ্বাস করেন না। তিনি হয়তো শুধু মানবধর্মে বিশ্বাসী। এই আবেদনকারীরা ওই কলামে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান-সহ নানা ধর্মের মধ্যে ‘অন্যান্য’ বলে যেখানে উল্লেখ থাকত তা বেছে নিতেন। অনেকে আবার লিখে দিতেন ‘নন বিলিভার’। এবার থেকে তাঁরা নিজের মত আরও স্পষ্ট করে প্রকাশ করতে পারবেন।” অধ্যক্ষার মতে, মানবতা ছাড়া যে কোনও ধর্মই হয় না, সেই বার্তাও এর মাধ্যমে নবীন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে। আর মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা বলছেন, ‘‘মানুষের প্রথম পরিচয় সে মানুষ। মানবতাই তার সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচয়। তাই কলামটি এমন রাখা হয়েছে।’’
বেথুনের অধ্যক্ষা অবশ্য জানাচ্ছেন, সুষ্ঠু ভাবে ভর্তির মেধা-তালিকা বার করাটাই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। তবে তার মধ্যেই ছোট ছোট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই এ বার অনলাইনে ভর্তির আবেদনপত্র প্রকাশের আগে কলেজে অ্যাডমিশন কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, এ বারের আবেদনপত্রে ধর্মের তালিকায় স্থান পাবে মানবধর্ম।
বেথুন ও মেদিনীপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন আবেদনকারী ছাত্রী থেকে শুরু করে তাঁদের অভিভাবকদের অনেকেই। তাঁদের একাংশের মতে, এর ফলে অনেকেই নিজের মত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছেন।
তবে শুধু কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রেই নয়। চাকরির আবেদন থেকে শুরু করে নানা জায়গায় ফর্ম ভর্তি করার সময়ে ধর্মের নাম লেখার একটি জায়গা থাকে, যা আবেদনকারীকে লিখতেই হয়। সেখানে বিভিন্ন ধর্মের নামের সঙ্গে সঙ্গে ‘অন্যান্য’ বলেও লেখা থাকে। বেথুন কলেজের মতো এ বার সেই সব জায়গায় ধর্মের কলামে মানবতাকে রাখা যেতেই পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় মনে করছেন, সব ধর্মেরই মূল কথা মানবতা। এখন ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক সময়ে বিভেদ সৃষ্টি হয়। আসলে ধর্মে ধর্মে কিন্তু কোনও বিভেদ নেই। শীর্ষেন্দুবাবুর কথায়, “আজকাল অনেকেই ধর্মীয় পরিচয় দিতে চান না বা দিতে লজ্জা পান। সে ক্ষেত্রে মানবতাকে বেছে নেওয়ার এই সুযোগ থাকাটা ভাল। তাতে আবেদনকারীকে একটা স্বাধীনতাও দেওয়া হল।” সমাজতত্ত্বের শিক্ষক অভিজিৎ মিত্র এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এই উদ্যোগ অনুসরণযোগ্য।”
https://www.anandabazar.com/west-bengal/kolkata/bethune-college-and-midnapore-college-included-humanities-in-their-religion-section-1.999637
জন্মসূত্রে পাওয়া প্রতিষ্ঠানিক ধর্মপরিচয় ছেড়ে (যেমন- হিন্দু, ইসলাম, খ্রিস্টান ইত্যাদি) নিজেকে মানবতাবাদী বা Humanist ঘোষণা করতে চাইলে সেই ব্যক্তিকে এফিডেফিট (Affidavit) করাতে হবে নোটারী দ্বারা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষর সহ পাকাপোক্ত একটি এফিডেফিট এর জন্য যাতে ভবিষ্যতে কোনোরকম সমস্যা না এসে দাঁড়ায় (In order to have that, a Religion Change affidavit has to be prepared mandatorily. The affidavit is a legal document that contains details like name, the new religion, old religion, and address. It must be made on stamp paper and notarized by a notary public.) আমি, সন্তোষ শর্মা একজন সাংবাদিক এবং ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’র সংযুক্ত সম্পাদক এবং ভারতের মানবতাবাদী সমিতির সদস্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ –এ ব্যারাকপুর নোটারী থেকে এস দত্ত মারফৎ ১৬ জন মুক্তচিন্তকদের সাথে এফিডেফিট করিয়ে Religion কলামে Humanism লেখার আইনত অধিকার লাভ করেছি। এফিডেফিট এর বয়ানটি তুলে ধরলাম -
"We, members of Humanist Association feel and sincerely believe that the greatest religion of Man is 'Humanism' which is most suitable for the protection and achievement of human rights and for the fullest expression of human talents. We therefore declare 'Humanism' as our religion. This is in accordance to the declaration of the General Assembly of UNO, November, 1981.
The religion of 'Humanism' is a way of life separate and different from any other like Hinduism, Islam, Christianity, Judaism etc. 'Humanism' has its separate organization and separate philosophy aiming at the total well-being of mankind where coercion and repression hardly exist."
ভারতে কোনো শিশুর জন্মনেওয়ার পরে পৌরসভা থেকে যে জন্মসংশাপত্র বা Birth certificate প্রদান করা হয় তাতে (form 5) কিন্তু Religion column বলে কিছু নেই, ব্যতিক্রমী কিছু যায়গা ছাড়া। অনেকেই অভিন্ন দেওয়ান বিধি অর্থাৎ Uniform Civil Code চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছেন। কিন্তু যতদিন না Uniform Civil Code তৈরি হচ্ছে, আইনের চোখে আবার ধর্ম থাকাটা বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে Criminal Law আবার ধর্মের ধার ধারে না কিন্তু Personal Law (যেমন- Property, Marriage, Divorce, Inheritance ইত্যাদি) লাগু করতে হলে আমাদের দেশে এখনও ধর্ম ছাড়া গতি নেই। এমনকি কেউ যদি বিশেষ বিবাহ আইন বা Special Marriage Act এ বিয়ে করেও থাকেন, সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে গোলমাল বাধলে তার নিষ্পত্তি কোনও না কোনও ধর্মের Personal Law অনুযায়ী হবে। তবে, উইকিপিডিয়ার একটি তথ্য জানাচ্ছে-
Q: What is all about religion change in India?
Ans: As per Article 15 of the Indian Constitution, freedom of religion is one of the fundamental rights in India. India is a secular country and every Indian citizen has the right to practice and promote their own religion peacefully. This means changing religion (due to self-belief, marriage, or divorce) is legal in India provided the same is in good faith and not because of any coercion or application of force. অন্যদিকে, জনৈক দুর্গাদাস বাবু জানিয়েছেন – “আমার মেয়ের বয়স এখন 22, ওর Birth certificate এ কোনো পদবী বা টাইটেল নেই, এবং ধর্ম হিসাবে Humanism লিখেছিলাম। প্রথমে একটু ঝামেলা করলেও দমদম মিউনিসিপ্যালিটি থেকে Birth certificate বের করতে পেরেছিলাম। ধর্ম এবং পদবী ছাড়াই আমার মেয়ের সমস্ত রকম কার্ড, পাসপোর্ট, PAN, Aadhar, Driving license, Ration card, Voter card আছে।”
প্রিয় পাঠকবন্ধু, আপনি কি স্নেহা পার্থিবরাজকে চেনেন? উনি তামিলনাড়ুর তিরুপাত্তুর-এর বাসিন্দা এবং পেশায় আইনজীবি। কিছুসময় আগে তিনি একটি ব্যতিক্রমী কাণ্ড বা নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটিয়েছেন তাও আবার ভারতের মতো ধর্ম ও বর্ণে শতবিভক্ত একটি দেশে। তিনিই ভারতের সেই প্রথম মহিলা যাঁর কোনো ধর্ম নেই এবং বর্ণও নেই (No Religion, No casts) এই স্বীকৃতি তিনি আদায় করেছেন দীর্ঘ লড়াইয়ের পর খোদ তামিলনাড়ু সরকারের কাছ থেকে। স্কুল জীবন থেকেই তিনি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজ পত্তরে ধর্ম ও বর্ণের যায়গাটি ফাঁকা রাখতেন। ২০১০ সাল নাগাদ তিনি এর জন্যে আইনি লড়াই শুরু করেন। পাশে পেয়ে যান তাঁর জীবনসঙ্গী পার্থিবরাজকেও। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মিলছে স্বীকৃতি। স্বয়ং তামিলনাড়ু সরকার, স্নেহা পার্থিবরাজকে সনদ পাঠিয়ে জানিয়েছিলেন, এবার থেকে স্নেহা নিজেকে ধর্মহীন এবং বর্ণহীন মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে পারবে। সরকার একই সঙ্গে জানিয়ে দেয়, এখন থেকে স্নেহার একমাত্র পরিচয়,তিনি ভারতীয়।
স্নেহা পেরেছেন। কিন্তু বাকিরা? আরে মশাই আর কতদিন? আর কতদিন জন্মসূত্রে পাওয়া প্রতিষ্ঠানিক ধর্ম কে আঁকড়ে ধরে বাঁচবেন? যুক্তিহীন ধর্মীয় বিশ্বাস ছেড়ে বের হয়ে আসুন। আনন্দ পাবেন। এমন এক অনাবিল আনন্দ যা টাকাপয়সা দিয়ে কেনা যায়না। অন্তত আগামীপ্রজন্মর স্বার্থেই এগিয়ে আসুন। গর্ব করে প্রচার করুন হিন্দু-মুসলিম-খ্রিষ্টান ইত্যাদি নয়, মানুষের একমাত্র ধর্ম হচ্ছে “HUMANISM”।
স্নেহা পার্থিবরাজ। আপনাকে কুর্নিশ। লেখাটি শেষ করবো একটি অন্যরকম খবর জানিয়ে।
“চাকরির নথিতে ‘নাস্তিক’ লেখার দাবি, শিক্ষা দফতরে চিঠি শিক্ষিকার তা-ও যদি না-হয়, তবে ফর্মে ধর্মের জায়গা পূরণ ‘ঐচ্ছিক’ করতে হবে।”
পদবি ওঁর কাছে ‘ধর্মচিহ্ন’ ছাড়া আর কিছু নয়। তাই মেয়ের নামের সঙ্গে পদবি জোড়েননি দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির শেরপুর রামচন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শর্মিলা ঘোষ। এ বার তিনি শিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠিয়ে তিনি দাবি করেছেন, চাকরি সংক্রান্ত সমস্ত নথিতে ধর্মের জায়গায় ‘নো রিলিজিয়ন’ বা ‘না-ধার্মিক’ লেখার সুযোগ তাঁকে দিতে হবে। একান্তই তা সম্ভব না-হলে, ফর্মের ওই জায়গায় ‘নাস্তিক’ অথবা ‘মানবিকতা’ লেখার সংস্থান থাকতে হবে নথিতে। আর তা-ও যদি না-হয়, তবে ফর্মে ধর্মের জায়গা পূরণ ‘ঐচ্ছিক’ করতে হবে।
শর্মিলা বলেন, ‘‘এখন চাকরি সংক্রান্ত সমস্ত নথি এবং ফর্মে ধর্মের জায়গায় আমাকে হিন্দু অথবা ‘আদার্স’ লিখতে হয়। এই ‘আদার্স’-এর অর্থও কোনও না কোনও ধর্ম। কিন্তু আমি কোনও ধর্মের বেড়াজালে আবদ্ধ নই। তাই ফর্মের ওই জায়গায় আমাকে না-ধার্মিক, মানবিকতা অথবা নাস্তিক লেখার সুযোগ দিতে হবে। তা সম্ভব না হলে, ধর্মের জায়গা পূরণ করার বিষয়টি ঐচ্ছিক করতে হবে।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘বছরের পরে বছর ধরে ওই ফর্মগুলিতে ধর্মের জায়গায় আমাকে হিন্দু অথবা আদার্স লিখে যেতে হচ্ছে। অথচ আমি প্রাতিষ্ঠানিক কোনও ধর্মপালন করি না। আমি আপাদমস্তক নাস্তিক এবং না-ধার্মিক।”
শর্মিলা ওই মর্মে চিঠি পাঠিয়েছেন শিক্ষা দফতরের কমিশনার, দফতরের সচিব, এবং জেলা স্কুল পরিদর্শককে। চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং নিজের স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিউদ্দিন আহমেদকে। ঘটনাচক্রে রফিউদ্দিন আবার শর্মিলার স্বামী। রফিউদ্দিন বলেন, ‘‘উনি ধর্মাচরণ করেন না। আমিও করি না। ওঁর বক্তব্যের সঙ্গে সহমত। শিক্ষা দফতরে একই আবেদন আমিও জানাব বলে ভাবছি।’’জেলা স্কুল পরিদর্শক প্রদ্যোৎ সরকারের বক্তব্য, ‘‘আমি ওই শিক্ষিকার আবেদনপত্র ই-মেল মারফত পেয়েছি। কিন্তু এই বিষয়টি আমার এক্তিয়ারে পড়ে না। তাই আমার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। এটি রাজ্য সরকারের বিষয়। যদি কিছু করার থাকে, রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দফতর করতে পারে।’’
শর্মিলা বলেন, ‘‘বেতন-সহ নানা বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হয়। ফর্ম ছাড়াও শিক্ষা দফতরের পোর্টালেও চাকরি সংক্রান্ত অনেক বিষয় পাঠাতে হয়। সর্বত্রই ইচ্ছার বিরুদ্ধেই আমাকে ধর্মের জায়গাটি পূরণ করতে হয়। অথচ আমি বাড়িতে বা অন্য কোথাও ধর্মাচরণ করি না। ধর্মীয় কোনও রীতিও মানি না। সেই কারণেই আমি ওই দাবির কথা জানিয়েছি দফতরকে।’’
নামের পাশে পদবির উল্লেখ নিয়েও তাঁর অবস্থান পরিষ্কার। শর্মিলার সংযোজন: ‘‘কেউ মানুক বা না-মানুক, এটা বাস্তব যে, পদবি দেখে মানুষের ধর্ম চেনা যায়। পদবিকে তাই আমি ধর্মচিহ্ন বলেই মনে করি। এই কারণে আমি মেয়ের নামের পাশে কোনও পদবির উল্লেখ করিনি।’’ শর্মিলার মেয়ের নাম ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’। স্কুল-সহ সব নথিতে এটাই তার নাম।
খবরটির লিংক- https://www.anandabazar.com/west-bengal/24-parganas/woman-wrote-letter-to-education-department-to-permit-her-to-write-atheist-on-religion-coloumn-1.1193102
তথ্যসহায়তায়: সুমিত্রা পদ্মনাভন (প্রাক্তন সভাপতি, ভারতের মানবতাবাদী সমিতি) সদ্যপ্রয়াত আইনজীবী শ্রী গীতানাথ গাঙ্গুলী এবং নোটারী অফিসার দেবদুলাল সাহা।